পেপটিক আলসার হলো পেটের এক ধরনের ঘা। এটি অনেকেরই হয়। সঠিক রোগ নির্ণয় ও নিয়মিত চিকিৎসা নিলে রোগ নিরাময় করা সম্ভব।

 শুধু পেপটিক আলসার নয় অন্য কারণেও ব্যথা হতে পারে। পিত্তথলীর ব্যথা হলেও এরকম হয়। আবার পেনক্রিয়াসে কোনো সমস্যা হলে সেখানেও ব্যথা হতে থাকে। সেজন্য আগে একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাম করে দেখা উচিত। আল্ট্রাসোনোগ্রামে বিশেষ করে পিত্তথলীর পাথর বা অন্য পাথর থাকলে এগুলো নির্ণয় করা যায়। যদি দেখাজায়  আল্ট্রাসোনোগ্রাম করে স্বাভাবিক আছে, কিন্তু পেট ব্যথা আছে তখন অ্যান্ডোস্কোপি করতে হয়। অ্যান্ডোস্কোপিতে যখন আলসার অথবা ইরোশন থাকে,তখন একে পেপটিক আলসার হিসেবে ধরে নেয়া হয়  আর তখনই চিকিৎসার  বিষয়টি চলে আসে। যারা অল্প দিনের ব্যথা নিয়ে আসে তাদের এক মাস নিয়মিত ওষুধ খেলে তার ভালো হয়ে যাওয়ার কথা।

অনেক সময় রোগীর জীবন যাপন পরিবর্তন করতে পারে না, সিগারেট খায়, পাতা জর্দা এগুলো ব্যবহার করে, কিংবা সকালে নাস্তা খাওয়ার কথা তা খায়না  , এই সমস্ত জীবন যাপনের যে পরিবর্তন আনা দরকার সেগুলো যদি না করে, তখন দেখা যায় একমাসে তার কাজ হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে চিকিৎসার ধরন বদলাতেহায়। এছাড়া যদি জীবাণুর কারণে হয়, সেক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা দিতে হয়।

 

 প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রথমেই তার জীবনাচরণে পরিবর্তন আনতে হবে। যদি সকালের নাস্তা না খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে সকালের নাস্তা বাধ্যতামূলক করতে হবে। খাওয়ার যে অনিয়ম সেটিও পরিবর্তন করতে হবে। কোনো দিন দুপুরে খেলো, কোনোদিন খেলো না, কোনো দিন নয়টায় খেলো, কোনো দিন রাত ১২ টায় খেলো। কোনো দিন না খেয়ে ঘুমিয়ে গেলো। এই সমস্ত বিষয়গুলো ঠিক করতে হবে। দ্বিতীয়ত যদি বদঅভ্যাস থাকে সিগারেট খাওয়ার, পান, গুল, পাতা এগুলো খাওয়ার অভ্যাস থাকলে, এগুলোও ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হবে। এরপর যদি সে নিয়মিত ওষুধ খায়, আমার মনে হয় পেপটিক আলসার থাকার কথা নয়।

এই আলসারটা আবার ম্যালিগনেন্ট আলসারও হতে পারে। সেক্ষেত্রে বায়োপসি করার প্রয়োজনীয়তা আসবে।  তখন বায়োপসি করতেহয়, এটা বেরিয়াম এক্সরে করলে সম্ভব নয়। কাজেই রোগটি ভালোভাবে নির্ণয় করতে যে সুবিধা দরকার সেটি কেবল অ্যান্ডোস্কোপিতেই সম্ভব।

ম্যালিগনেন্ট আলসার হলে ওষুধের চিকিৎসা তেমন নেই। যদি প্রাথমিক অবস্থায় ম্যালিগনেন্ট আলসার ধরা পড়ে, যদি বায়োপসিতে প্রমাণ হয়, তাহলে আগেভাগে সার্জারি করলে, সুস্থ হবে। এটা ওষুধে হবে না। সার্জিক্যাল চিকিৎসা লাগবে। তখন সার্জনের কাছে রেফার করে অস্ত্রোপচার করতে হয়। আলাসার থেকে সার্জারিও করতে হতে পারে। যদি সেটা ম্যালিগনেন্ট হয়ে থাকে।

অনেক রোগী নিয়মিত গ্যাসের ওষুধ খায়, তারপরও গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে এই সমস্ত রোগী হরহামেশাই পাওয়া যায়। কিন্তু যদি একটু ভালো করে প্রশ্ন করা যায়, তখন দেখা যায় সে ওষুধগুলো নিয়মিত খায় না। একটা দুটো ওষুধ খাওয়ার পর ব্যথা কমলো। এরপর সে ভুলে যায়। আর খায় না। আলাসারকে নিরাময় করতে গেলে একটি নির্দিষ্ট ডোজ, নির্দিষ্ট সময় খেতে হবে। তখন আলসার নিরাময় হবে। অনিয়ম করলে সাতদিন পর আবার একটা ওষুধ খেলে এটা নিরাময় হবে না। 

মোটকথা পুরোমাত্রায় ওষুধ খেতে হবে। অনেক সময় জীবাণু বিরোধী ওষুধ খেতে হবে। ওষুধ নিয়মিত খেতে হবে এবং নিয়ম মাফিক চলতে হবে।   

পেপটিক আলসার এর ব্যাবহুদ ঔষধ ও তার ব্যাবহার। 

এন্টাসিড (antacid)

ফেমোটিডিন (Famotidine)

ওমেপ্রাজোল (Omeprazole)

ইসোমিপ্রাজোল (Esomeprazole)

প্যান্টোপ্রাজোল (Pantoprazole)

ল্যান্সপ্রাজোল (lanceprazole)

রাবেপ্রাজোল (Rabeprazole)