এপেন্ডিসাইটিস (Appendicitis) বলতে সাধারণভাবে এপেন্ডিক্সের প্রদাহকে বোঝায়। এপেন্ডিক্সের হচ্ছে ২ থেকে ২০ সে মি দৈর্ঘ্যের নলাকার একটি অঙ্গ। এটি বৃহতন্ত্রের সাথে সংযুক্ত অবস্থায় থাকে। যদি কোন কারণে এপেন্ডিক্সের মধ্যে ইনফেকশন হয়,তথন এটি ফোলে যায় ও প্রদাহ হয়। একেই এপেন্ডিসাইটিস বলে। 

দ্রুত এর চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকায় এপেন্ডিসাইটিসকে অত্যন্ত জরুরী অবস্থা হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং অপারেশনের মাধ্যমে দ্রুত অপসারণ করা হয়। এপেন্ডিক্সে কোন কারনে ফেটে গেলে জীবাণু সমগ্র পেটে ছড়িয়ে পরে। এ অবস্থা পেরিটোনাইটিস নামে পরিচিত। এটি অত্যন্ত বিপদ জনক অবস্থা। এ রকম হলে রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি থাকে। 

আবার কম ত্রীব্রতার এপেন্ডিসাইটিস আছে যেটা এপেন্ডিসাইটিস রাম্বলিং হিসাবে পরিচিত। তলপেটে হঠাৎ করে ব্যথা উঠলেই সেটা এপেন্ডিক্স এর ব্যথা নাও হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে,চিকিৎসকের পরামর্শ মত ঔষধ খেলে ভালো হয়। 

কারণ 

এপেন্ডিক্স এর ভেতরে প্রতিবন্ধকতার কারণে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি হয়ে এপেন্ডিক্স ফুলে ওঠে এবং এতে পোজ জমতে থাকে।

দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে এই এপেন্ডিক্স ফেটে রোগীর জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকে। 

লক্ষণ ও উপসর্গ (Signs and symptoms)

এপেন্ডিসাইটিস হলে নিম্নলিখিত লক্ষণ বা উপসর্গসমূহ দেখাদিতে পারে। 

  • পেটে একটানা ব্যথা হতে পারে। ব্যথা নাভির চারদিকে থেকে শুরু হয় এবং ক্রমশ বাড়তে বাড়তে কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই নাভির নিচের অংশে ডানদিকে সরে যায়। 
  • ক্ষুধামন্দা অর্থাৎ খিদে কমে যেতে পারে। 
  • কাশি বা ঠান্ডায় কাঁপুনি হতে পারে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া হতে পারে।
  • জ্বর ও শরীরে সাইড পেইন হতে পারে। 

জটিলতা (Complication)

  • গ্যাংগ্রিন বা পচঁন ধরা। 
  • পেরিটোনাইটিস। 
  • এপেন্ডিকুলার লাম্প। 
  • এবসেস।  
  • বাওয়েল অবট্রাকশন। 
  • ওল্ড ইনফেকশন ও মৃত্যু। 

 চিকিৎসা

এপেন্ডিসাইটিস হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। করেন সময় মত চিকিৎসা না করলে এপেন্ডিক্স ছিদ্র হয়ে ইনফেকশন পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবং এতে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। 

যেহেতু এপেন্ডিক্স এর সুনিদৃষ্ঠ চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশন,তাই দেরি না করাটাই ভালো। অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজন মনে করলে চিকিৎসকেরা অপারেশন না করেও চিকিৎসা করে থাকে। 

দুই ধরনের অপারেশন আছে ;

  1. পেট কেটে অপারেশন।
  2. ল্যাপারোস্কোপ দিয়ে। 

অপারেশন দুইটার মাজে একটাই পার্থক্য তা হল ,পেট কাটলে দাগ থাকবে কিন্তু ল্যাপারোস্কোপ এর মাধমে করলে দাগ থাকবে না।