আমাশয় কি ?

আমাশয় বা ডিসেন্ট্রি বলতে এমিবা বা এককোষী পরজীবী বা প্যারাসাইট এবং সিগেলা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যা মানব দেহের পরিপাক তন্রে বাসা বেঁধে ঘা বা ইনফেকশন সৃষ্টি করে মলের সাথে পেটে কামড়ানো সহ পিচ্ছিল আম অথবা শ্লেমাযুক্ত রক্ত যাওয়াকে বোঝায়।

আধুনিক প্রযুক্তির কয়েএকটি ভাইরাস,ছত্রাক ও কৃমি জাতীয় জীবাণুও আমাশয় সৃস্টি করতে পারে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

কারণ 

পানি,বাতাস,মশা, মাছি ও খাবারের মাধ্যমেই সাধারণত এই রোগ সংক্ৰমিত হয়ে থাকে।গরম অঞ্চলে এ রজার প্রকোপ বেশি হয়ে থাকে।বিশেষ করে বন্যা কবলিত অঞ্চলে কোন কোন সময় মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। মূলত এমিবিক ডিসেন্ট্রি কিছু কিছু ফল,সালাত খাওয়া, বিশুদ্ধ পানি পান এগুলো আমাশয় আক্রান্ত হওয়ার বড় কারণ।

আক্রান্ত বেক্তির সঠিক ভাবে হাত পরিষ্কার না করে থাকলে তার কাছ থেকেও ছড়াতে পারে পরিবারের অন্যদের। উন্নয়নশীল দেশে দেখাযায় বন্ধ জলাভুমির পানি পান করার করনেই আমাশয় জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে বেশি বা অনেক সময় ভাসমান কিছু হটেলের খাবার থেকেও হতে দেখা যায়.

এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পূর্ন দিক হলো, এ ধরনের অসুখে আক্রান্ত রোগীরা যদি রাস্তা ঘাটে পায়খানা করে থাকেন বা সুপ্ত ঘাসের উপর পায়খানা করে থাকেন, তখন এই ঘাস কোন গৃহপালিত প্রাণী খেয়ে থাকেন তখন আরও মারাত্বক ক্ষতি হয় যা আমরা অনেক সময় পশু বলে এড়িয়ে যাই।

অ্যামিবিক আমাশয় কি ?

অ্যামিবিক বা এন্ট্যাবিমা  হিস্টোলাইটিক নামক জীবাণু দ্বারা সংক্ৰমিত হয়। এটি মূলত পানি বাহিত রোগ। এন্ট্যাবিমা বৃহদান্তে বাস করে এবং সেখানকার প্রাচীর গাত্র থেকে পুষ্টি সংগ্ৰহ করে। এতে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে মলের সাথে প্রচুর মিউকাস ও রক্ত বের হয়। এই পরজীবী প্রাণীগুলো আক্রমন করলে কয়েক ঘন্টা বা একদিন থেকেই পেটে অসস্থি ও ভার ভার বোধ হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং তার পরে উদারাময় দেখা দেয়। পায়খানার পূর্বে নাভির চার পাশে ও তলপেটে ব্যথা অনুভত হয়।

ঘন ঘন পেটে মোচড় দিয়ে পায়খানা যাওয়া, পায়খানার সাথে রক্ত বা আম মিশ্রিত অবস্থায় যাওয়া, পায়খায় বসলে উঠতে ইচ্ছা হয়না বা উঠা যায় না। ক্ষেত্র বিশেষ দিনে ২০/৩০ বা পায়খানা হতে পারে। সেই সাথে ডায়রিয়া সকল লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে পেতে বায়ু জমে এবং দেহের তাপ বৃদ্ধি পেয়ে অল্প জ্বরও আসতে পারে। কিন্তু পায়খানা খুব অল্পই হয়।

রক্ত আমাশয় কি ?

এ ধরনের আমাশয় মুলে রয়েছে একটি মাত্র ব্যাক্টেরিয়া যার নাম সিগেলা (shigella ) . ইহা আক্রমনের পরেই পায়খানা হলে প্রথমে কালো কালো এবং পরে পায়খানার সাথে কফ বা মিউকাস মিশ্রিত অল্প অল্প হলদে, সবুজ, কাল মল নির্গিত হতে থাকে।

জীবাণু দ্বারা অন্ত্রের ঝিল্লি ক্ষত বিক্ষত হলে রক্তস্রাবের কারনে পায়খানা লালচে হয়ে যায়। মলের সাথে রক্ত নির্গত হয়, তখন এ রোগকে বলা হয় রক্ত আমসায়। ১ টি ৩ দিনের মধ্যেই রোগের উপসর্গ প্রকাশ পেতে শুরু করে।

আমাশয় এর লক্ষণ

প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগের লক্ষণ গুলো হলো – কয়েএকদিন আগে থেকেই পেটে অস্বস্তি ও ভার ভার বোধ হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং তার পরে উদারাময় দেখা দেয়। পায়খানার পূর্বে নাভির চার পাশে ও তলপেটে ব্যথা অনুভত হয়

ঘন ঘন পেটে মোচড় দিয়ে পায়খানা যাওয়া, পায়খানার সাথে রক্ত বা আম মিশ্রিত অবস্থায় যাওয়া, পায়খায় বসলে উঠতে ইচ্ছা হয়না বা উঠা যায় না। সেই সাথে ডায়রিয়া সকল লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে পেতে বায়ু জমে এবং দেহের তাপ বৃদ্ধি পেয়ে অল্প জ্বরও আসতে পারে। কিন্তু পায়খানা খুব অল্পই হয়।

 

জটিলতা 

আমাশয় যদি দীর্ঘ দিন ধরে হয় তবে নানা বিধ জটিল লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। উভয় অন্ত্রে ক্ষত বা ঘায়ের সৃষ্টি করতে পারে। বুকে বা পিঠে ব্যথা দেখা দিতে পারে। অন্ত্রে ক্ষত হতে পারে এবং ধীরে ধীরে intestinal ক্যানসার হতে পারে। লিভার আক্রান্ত হয়ে হেপাটাইটিস হতে পারে। liver abscess বা জন্ডিসও হতে পরে।

আমাশয় রোগের কারণ
আমাশয় রোগের কারণ

চিকিৎসা 

 

  1. বিশ্রাম করতে হবে।
  2. ট্যাবলেট Metronidazole 400 mg . ১ টা করে দিনে ৩ বার ৭ দিন।
  3. প্রতিবার পাতলা পায়খানার জন্য ORS  নিয়ম অনুযায়ী।
  4. যেসমস্ত খাবার সহজে হজম হয় তা পরিমান মত খেতে হবে।
  5. জটিল আকার ধারণ করলে নিকটবর্তী স্বাস্থা কেন্দ্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মত ঔষধ খেতে হবে।