জলাতংক রোগটি রেবিস ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমণের ফলে হয়। এটি একটি আর এন এ (R N A )ভাইরাস। এই ভাইরাসের বাইরে একটি আবরণ বা এনভেলপ থাকে।জলাতংকে আক্রমনে মানুষ পানি দেখলে ভয় পায় বলে এ রোগের নাম জলাতংক। আমাদের দেশে মানুষ মনে করে কুকুর কামড়ালে এ রোগটি হয় ,আসলে এটি ভ্রান্ত ধারণা। জলাতংক রোগে আক্রান্ত কোন পশু সুস্থ পশুকে বা মানুষকে কামড়ালে এ ভাইরাস আক্রান্ত হয়। জলাতংক রোগে আক্রান্ত কুকুর,বিড়াল,শিয়াল,বেজী,বানর ইত্যাদির মাধমে এরোগ হতে পারে। 

জলাতংক আক্রান্ত মানুষের লক্ষণ :

কুকুর কামড়ানোর ১০ দিন পর (সাধারণত ৩ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে )জলাতঙ্কের প্রথম লক্ষণ গোলু দেখাদেয়। লক্ষণ প্রকাশের পূর্বে চিকিৎসার শুরু করতে হবে।

  • কামড়ের জায়গায় ব্যাথা ও চিনচিন করে। 
  • জ্বর,ডুকগিলতে ব্যাথা ও খিঁচুনি হয়। 
  • পানি পান করতে চায়না অথবা পানি দেখলে ভয় পায়। 
  • খুব চট চটে লালা ঝরে। 
  • শান্ত থাকতে থাকতে হঠাৎ রেগে যায়। 
  • পরে রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় এবং পক্ষাগাত দেখা দেয়। 

জলাতংক আক্রান্ত প্রাণীর লক্ষণ :

  • এ রোগে কোন প্রাণী আক্রান্ত হলে পাগলের মত আচরণ শুরু করে। সামনে মানুষ বা পশু যাকেই পায় তাকেই কামড়াতে চায়। 
  • সর্বক্ষণ ঘেউ ঘেউ করে ও মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে। 
  • আক্রান্ত প্রাণীটি খাওয়া বন্ধ করেদেয় এবং নিস্তেজ হয়ে পরে ও কয়েক দি
    কুকুর কামড়ালে কত দিনের মধ্যে জলাতঙ্ক হয়

    নের মধ্যে মারা যায়। আক্রান্ত প্রাণীটির চোখ লাল ও ঠান্ডা জায়গাতে চপ করে শোয়ে থাকে। 

কুকুর কামড়ালে নিম্ন লিখিত ব্যাবস্থা নিতে হবে ;

  • বিড়াল কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতস্থান ভালো ভাবে সাবান পানি দ্বারা তারপর আয়ুডিন বা এন্টিসেপটিক লোশন দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে।
  • কুকুর বা বিড়াল পরিচিত ও স্বাভাবিক অবস্থায় এলাকায় অবস্থান করছে কিনা তা জানতে হবে।
  • পালিত কুকুর বা বিড়াল হলে গৃহকর্তার নিকট কুকুর বা বিড়ালের বর্তমান আচরণ অস্বাভাবিক কিনা তা জানতে হবে।
  • পালিত কুকুর বা বিড়াল জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেয়া আছে কিনা এবং দেয়া থাকলে প্রতিষেধকের কার্যকরী মেয়াদ কতদিন তা জানতে হবে।
  • পালিত কুকুর বা বিড়াল যদি পরিচিত বাড়িতে বা পাড়ার থাকে তাহলে ১০ দিন কুকুর বা বিড়ালটি পর্যবেক্ষনে রাখতে হবে। জলাতংক গ্রস্থ হলে প্রাণীটি ১০দিনের মধ্যে মারাযাবে অন্যথায় ভয়ের কারণ নেই।
  • যদি ঔ প্রাণীটি অপরিচিত হয় বা ১০দিন পর্যবেক্ষন না করাহয় বা কামড়ানোর পর যদি মেরে ফেলাহয় অথবা এর কোন খুজ পাওয়া না যায় তাহলে অতি তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • রোগীকে ধনুষ্টঙ্কার প্রতিষেধক নিতে হবে।

প্রতিরোধ

পোষা কুকুর বিড়ালকে রেবিস এর প্রতিষেধক দেওয়া উচিত।
যাদের (পশু ডাক্তার, পশু ব্যাবসায়ী,পশু পালক)পশু কামড়ানোর সম্ভাবনা বেশি তাদের আগেই টিকা দেওয়া উচিত।
রেবিস আক্রান্ত প্রাণী কামোড় দিলে বা সন্দেহ হলে টিকা নিতে হবে এবং কামড়ানোর স্থানটি দ্রুত ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে ও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে