পারিবারিক ও অন্যান্ন পরিবেশে আমরা অনেক সময় নাক ডাকার সমস্যায় ভুগে থাকি। নাক ডাকার শব্দ অন্যদের কষ্টের কারন হলেও যে নাক ডাকে সে কিন্তু অনেক সময় এ ব্যাপারে কিছুই বুজতে পারে না। নাক ডাকা নিয়ে সমস্যা কোন নতুন ঘটনা নয়। এ কারনে বিদেশে দাম্পত্য কলহ থেকে শুরু করে বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

তাছাড়া শারীরিক ভাবে নাক ডাকার জটিলতায় শ্বাস-প্রস্বাসের প্রতিবন্ধকতার কারনে ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধ জনিত সমস্যায় হৃদরোগ ও শ্বাস-প্রস্বাসের নানা রোগ সহ কদাচিৎ ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে।

উন্নত বিশ্বে এ রোগকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখাহয় এবং এর চিকিৎসাও প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। 

কিভাবে নাক ডাকে 

নাক বা মুখ দিয়ে আমরা যে বাতাস গ্রহণ করি,তা ফ্যারিংস বা গলবিল হয়ে ল্যারিংস বা শ্বাসযন্ত্র হয়ে ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালিতে প্রবেশ করে। সেখান থেকে ব্রংকাস বা ক্লোমনালি হয়ে ব্রংকিওল বা ক্লোমনালিকা হয়ে এলভিওলাস বা ফুসফুসের বায়ুথলিতে পৌঁছে। 

নিঃশ্বাসের সময় বাতাস আবার এ পথেই ফিরে আসে। শ্বাসপথের সবচেয়ে কোমল অংশ ফ্যারিংস,যা ওপরের দিকে শেষ হয় নাকের পেছনে বা নেসফ্যারিংসে এবং নিচের দিকে লেরিংগোফ্যারিংসে। স্বাভাবিক অবস্থায় ফ্যারিংসের আকার বেশ বড়, অনেকটা জায়গাজুড়ে। 

কিন্তু ঘুমানোর সময় এর আয়তন ছুট হয়ে যায়। তালু,ফ্যারিংস,জিভ ইত্যাদি মাংসপেশির মিথিলতার কারনে জিভ এসময় কিছুটা পেছনে অর্থাৎ ফ্যারিংসের দিকে ঝুলে পড়ে।

ফলে নিঃশ্বাসের সময় ফুসফুস থেকে যে বাতাস শ্বাসপথ ধরে বের হতে থাকে,সেটা বাধাপায় কম্পন সৃষ্টি হয় তালু ও ফ্যারিংসে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় এই কম্পনের ফলে সৃষ্ট শব্দই নাক ডাকা। 

নাক ডাকার কারণ 

প্রধানত নাক ও গলার অসুখসহ শরীরের অন্যান্ন অসুখ-বিসুখেরও অনেকে নাক ডেকে থাকে। 

  1. নাকের অসুখঃ নাকের মধ্যবর্তী হাড় বাঁকা,নাকের মাংসপেশির স্ফীতি,এলার্জি,নাকে পলিপ,টিউমার,নানা কারনে নাক বন্ধ থাকলে। 
  2. গলার অসুখঃ টনসিলের প্রদাহ,নাকের পেছনে এনিয়েড গ্লান্ড বৃদ্ধি,ফ্যারিনজাইটিস,তালুর প্যারালাইসিস,ল্যারিংসের সিস্ট,পলিপ, প্যারালাইসিস।
  3. অন্যান্য অসুখঃ অতিরিক্ত মদ্যপান,ধূমপান,থাইরয়েডের অসুখ,মস্তিষ্কের অসুখ,স্নায়ুঘটিত রোগ ইত্যাদি। 

 চিকিৎসা

যদি এডিনয়েডের ফলে সমস্যা হয়, তখন এটি অপসারণ করতে হয়। পলিপের কারণে হলেও অপসারণ করে ফেলতে হয়। 

কিছু ক্ষেত্রে দেখাযায়,গলার ভিতরে পেছনের দিকটা কিছুটা সরু হয়ে আছে , যেটাতে krauding of the oroferings বলে।

বিশেষ করে যাদের ওজন বেশি,তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা হয়। যদি ওজন কমিয়ে আনা যায় ,তবে এর সমাধান হতে পারে।