জন্ডিস কি

Jaundice

আসলে কোন রোগ নয়। এটি একটি রোগের লক্ষণ মাত্র। Jaundice শব্দটি ফরাসি শব্দ jaunisse থেকে এসেছে , যার অর্থ হলুদাভ। জন্ডিস হলে রক্তে বিলোরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং ত্বক ,চখের সাদা অংশ এবং অন্যান্ন মিউকাস জিল্লি হলুদ হয়ে যায়। আমাদের রক্তে র লোহিত কণিকা গুলো স্বাভাবিক নিয়মেই একটা সময় ভেসে গিয়ে বিলোরুবিন তৈরি করে যা পরবর্তী সময়ে লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে পিত্তরসের সাথে পিত্তনালীর সাহায্যে পরিপাক তন্রে প্রবেশ করে। অন্ত্র থেকে বিলোরুবিন পায়খানার সাথে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। বিলোরুবিনের এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমা স্বাভাবিক ভাবে না হয়ে যেকোন অসঙ্গতি দেখা দিলে রক্তে বিলোরুবিনের মাত্রা বেড়েযায় এবং এ রোগ দেখা দেয়।

জন্ডিস কেন হয়

রক্তে বিলোরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে এ রোগ দেখাদেয়। সাধারণত লিভারের রোগই জন্ডিসের প্রদান কারন। আমরা যা কিছু খাই তা লিভারেই প্রক্রিয়াজাত হয়। লিভার ভিবিন্ন কারনে রোগাক্রান্ত হতে পারে। হেপাটাইটিস এ,বি,সি,ডি  এবং ই ভাইরাসগুলো লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে যাকে বলা হয় ভাইরাল হেপাটাইটিস। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বেই জন্ডিসের প্রদান কারন এই হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলো। উন্নত দেশগুলোতে অতিরিক্ত মদ্যপান জন্ডিসের একটি অন্নতম প্রদান কারন

জন্ডিস কি ভাইরাস জনিত রোগ

এছাড়াও অটোইমিউন লিভার ডিজিজ,বংশগত কারন সহ আরোও নানা ধরনের লিভার রোগেও জন্ডিস হতেপারে। ঔষধের পার্শ প্রতিক্রিয়াতেওঁ অনেক সময়  এ রোগ হয়ে থাকে। তাছাড়া থ্যালাসিয়া ও হিমোগ্লোবিন ই-ডিজিজের মত যে সকল রোগে রক্ত ভেঙে যায় কিংবা পিত্তনালীর পাথর অথবা টিউমার হলে এ রোগ হতে পারে। আবার লিভার বা অন্য কোথাও ক্যান্সার হলেও জন্ডিস হতে পারে। জন্ডিস মানেই লিভারের রোগ এমনটি ভাবা ঠিকনয়।

জন্ডিস রোগের প্রকারভেদ (Classification )

এ রোগের প্রকারভেদ হিসাবে তিনভাগে ভাগ করা যায় : :

প্রি -হেপাটিক :রক্তে লোহিত কণিকা কোন কারনে বেশি ভাঙলে। যেমনঃ

  •      হিমোলাইটিক এনিমিয়া।
  •     ম্যালেরিয়া।
  •     থ্যালাসেমিয়া।

হেপাটিক :লিভারের মধ্যে কোন সমস্বা থাকলে। অধিকাংশ জন্ডিস এ কারণেই হয়ে থাকে। যেমনঃ ভাইরাল হেপাটাইটিস (a ,b ,c ,d ,e )অতিরিক্ত মদ্য পানের ফলে ,লিভার ক্যান্সার হলে।

পোস্ট হেপার্টিক :পিত্ত লিভারে তৈরি হবার পর লিভার থাকে বের হবার রাস্তায় কোন সমস্যা থাকলে। যেমনঃ পিত্তনালীর রাস্তায় পাথর,পিত্তনালীর ক্যান্সার।

জন্ডিসের লক্ষণ

জন্ডিসের প্রধান লক্ষণ হল চোখ ও পস্রাবের রং হলুদ হয়ে যাওয়া ,আবার সমস্যা বেশি হলে পুরো ঘাড় হলুদ বর্ন ধারণ করতে পারে।

  •      শারীরিক দুর্বলতা।
  •      খোদামন্দা।
  •      জ্বর জ্বর অনুভতি কিংবা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা।
  •      বমি বমি ভাব অথবা বমি।
  •      মৃদু বা তীব্র পেট ব্যাথা।
  •      অনেকসময় পায়খানা সাদা হয়ে যাওয়া।
  •      যকৃত শক্ত হয়ে  যাওয়া।

জন্ডিস এর প্রতিকার অথবা করনীয়

এ রোগটির এর প্রতিকার অথবা করনীয় গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো –

  1.      হেপাটাইটিস -এ ও ই খাদ্য ও পানির মাদ্যমে সংক্ৰমিত হয়। আর
  2.      হেপাটাইটিস -বি , হেপাটাইটিস -সি  এবং  হেপাটাইটিস -ডি  দূষিত। তাই সবসময় বিশুদ্ব খাবার ও পানীয় খেতে হবে।
  3.     রক্ত,সিরিঞ্জ এবং আক্রান্ত বেক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের মাদ্যমে ছড়ায়। তাই সব সময় ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ বেবহার করতে হবে। ও নিরাপদ যৌনমিলন করতে হবে।
  4.     মদ পান ও নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। কল কারখানার নির্গত রাসায়নিক পদার্থ থেকে দূরে থাকতে হবে। সেলুনে সেভ করার সময় অবস্যই নতুন ব্লেড ব্যাবহার করতে হবে।
  5.     হেপাটাইটিস -এ এবং হেপাটাইটিস -বি হবার আশঙ্কা মুক্ত থাকতে আর ভেকসিন নিতে হবে।

জন্ডিস হলে কি ঔষধ খাব

ভাইরাল হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়া চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্তপর্ন। কোন কোন ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়জন হয়।

ভাইরাল হেপাটাইটিস সাধারণত ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ভালহয়। এসময় ব্যথার ঔষধ প্যারাসিটামল,এসপিরিন,ঘুমের ঔষধসহ অন্য কোন অপ্রয়জনীয় ঔষধ খাওয়া যাবেনা।

জন্ডিস হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধই সেবন করা যাবেনা। অনেক ক্ষেত্রে তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

কি কারনে জন্ডিস হয়েছে তা সঠিক ভাবে নির্নয় করে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।