পেপটিক আলসার  হল মানবদেহের পাচঁতন্ত্রের আলম পরিবেশমুক্ত (অর্থাৎ পাকস্থলী ও ক্ষুদ্রান্তের ডিওডেনাম )অংশের ক্ষতজনিত একটি রোগ। পরিপাকতন্ত্রের যে জায়গাগুলোতে এসিড এবং পেপসিন (digestion )হয় সেখানে যদি আলসার হয় তাকে পেপটিক আলসার নামে অভিহিত করা হয়। পেপটিক আলসার সাধারণত খাদ্যনালির নিম্নাংশ,পাকস্থলী,ডিওডেনাম,ক্ষুদ্রান্তে হয়,তবে বেশি হয় পাকস্থলী এবং ডিওডেনামে। 

কারণ (Causes )

  • সঠিক কারণ জানা যায় নি। 
  • পাকস্থলীর প্রতিরোধ ক্ষমতা (defensive mechanism) এবং এসিড ও পেপসিন এর মধ্যে যদি অসমতা হয়। যেমনঃ 

     মিউকোলাস প্রতিরোধ কমে গেলে।      

  পাকস্থলীর রস নিঃসরণ যদি বেড়েযায়।

  • ধূমপান মদ্য পান। 
  • খাবার ঠিকমত না চাবানো এবং খাবার অভ্যাস যদি অনিয়মিত হয়। 
  • যাদের রক্তের গ্রূপ ‘o ‘ তাদের ডিওডেনাম আলসার বেশি হয়। 
  • দুশ্চিন্তা,আবেগ প্রবণতা ,পোড়া ,আঘাত বা অপারেশন। 
  • নন স্টেরয়েড প্রদাহ বিরোধী ঔষধ (aspirin ,indomethacin)এবং কর্টিকোস্টেরয়েড। 
  • হেলিকোব্যাকটার পাইলরি (Helicobacter pylori) নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়। শতকরা ৮০ জনের এই সংক্ৰমন আছে।  

রোগের লক্ষণ ও উপসর্গঃ (Signs and symptoms)

  • পাকান্ত্রিক রক্তক্ষরণের ফলে রোগী দুর্বলতা প্রকাশ করে। অজ্ঞান হয়ে পড়তে পারে। বমি বমি লাগে এবং ঘাম হতে পারে। 
  • এসব লক্ষণের পর রক্ত বমি অথবা পায়খানার সাথে কালো রক্ত যেতে শুরু করে। 
  • বমির সাথে রক্ত টাটকা হতে পারে কিংবা কফির লিকারের মত হতে পারে। 
  • পায়খানার সাথে রক্ত অন্ত্রের ভিতর দিয়ে খাবার বিবর্ণ হয়ে আলকাতরার মত কালো বর্ণের হয়। 
  • তবে মারাত্ত্বক হলে বমি কিংবা পায়খানার সাথে টাটকা রক্ত যেতে পারে। 
  • রোগী শকে চলে যায় ,অস্থির হয় ,ভুল বকে ; এ সবই হয় মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন কমে যাবার ফলে। 
  • রোগীর নারীর গতি দ্রুত হয় এবং রক্তচাপ কমে যায়। 

ল্যাবরেটরি পরীক্ষা (investigation)

রোগীর ইতিহাস এবং কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগ নির্নয় করা হয়। যেমনঃ ডিওডেনাল আলসারের ক্ষেত্রে —

উপরের পেট ব্যাথা হয় এবং ব্যাথা খালি পেটে হয়। খাবার ফলে ও এন্টাসিড খেলে ব্যাথা কমে যায়। 

অনেক দিনের পুরোনো ইতিহাস থাকে এবং বছরে নিদ্রিষ্ট সময় পর পর ব্যাথা হয়। 

বেরিয়াম মিল x-ray করলে ডিওডেনাল ক্যাপের ডিফরমিটি দেখাযায়। 

চিকিৎসা (treatment)

  • পেপটিক আলসার রোগীকে যতশীঘ্র সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে হবে। 
  • যতক্ষন হাসপাতালে পাঠানো না হয় ততক্ষন রোগীর চিকিৎসা নিম্নরূপ হতে পারে। 
  • রোগীকে মুখে কিছুই খেতে দেয়া যাবে না। 
  • কিছুক্ষন পর পর রোগীর pulse,blood pressure পরীক্ষা করতে হবে ,তাতে রোগীর অবস্থা কেমন তা বুজা যাবে এবং shock হচ্ছে কিনা তাও বুঝা যাবে। 
  • রক্তের বিকল্প রক্তই,কিন্তু হাসপাতাল ছাড়া যেহেতু সেটা transfusion সম্ভব নয় তাই বিকল্প হিসাবে hartmann solution দেয়া যেতে পারে। 
  • আলসার বিরোধী ঔষধ ইঞ্জেকশন হিসাবে দেয়া যেতে পারে।