ফ্যারিনজাইটিস কি?

Pharyngitis বলতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের দ্বারা রোগ সংক্রমণের কারণে গলার পেছনের দিকে অর্থাৎ গলবিলে ব্যথা হওয়াকে বোঝায়।গলা ব্যাথার কারণগুলোর মধ্যে প্রধান হলো ফ্যারিনজাইটিস। মূলত ভাইরাস জনিত pharyngitis বেশি হয়ে থাকে,যা থেকে পরে ইনফেকশন হতেপারে। এটি অনেক সময় একই সঙ্গে টনসিলের প্রদাহও তৌরি করে।

ফ্যারিনজাইটিস কেন হয়

সাধারণত এডেনো ভাইরাস,রাইনো ভাইরাস,ও রেস্পাইরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাসের কারনে ফ্যারিনজাইটিস হয়। এ ছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ,মিসালস এবং ভেরিসেলা ভাইরাসের সংক্রমণেও গলা ব্যাথা হতে পারে। আবার স্টেফাইলোকক্কাস হিমোলাইটিকস,নন  হিমোলাইটিক স্টেফাইলোকক্কাস,নিউমোকক্কাস এবং হিমোফেলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়ার কারনেও ফ্যারিনজাইটিস হয়। 

 

  এ ছাড়া ঠান্ডা ও সেঁতসেঁতে রুমে গাদা গাদি করে বসবাস করা,তারপর হঠাৎ পরিবর্তন,অতিরিক্ত ধুলাবালি ও দূষণ মুক্ত এলাকায় বসবাস করা,রোগপ্রতিরূদ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণেও এটি হয়ে থাকে। এসবের বাইরেও ডিপথেরিক ফ্যারিনজাইটিস, ভিনসেন্টস এনজাইনা,টিউবার্কুলার ফ্যারিনজাইটিস,সিফিলিক ফ্যারিনজাইটিস ও ছত্রাক সংক্ৰমণ জানিত ফ্যারিনজাইটিসও হয়। 

 

ফ্যারিনজাইটিস এর লক্ষণ ও উপসর্গ 

 

ফ্যারিনজাইটিস হলে সাধারণত যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ  দেখাযায় তা নির্ভর করে  রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ইনফেকশনের ত্রীব্রতার উপর। 

 

     *গলার ভিতর খুস খুস করা 

 

     *ডুকগিলতে অসুবিধা বোধ করা 

 

     * গলার স্বর বসে যাওয়া 

 

     * গলায় ব্যাথা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি। 

 

পাশাপাশি যদি নাকে ও সাইনাসে ইনফেকশন থাকে,তাহলে নিচের লক্ষণ ও উপসর্গ  থাকতে পারে। 

 

     *নাকদিয়ে পানি পড়া 

 

     *হালকা জ্বর ও মাথা ব্যাথা 

 

     *সর্দি,হাঁচি এবং শরীরে ব্যাথা 

 

ফ্যারিনজাইটিস মারাত্বক আকার ধারণ করলে এর সঙ্গে টনসিলের প্রদাহ হতে পারে ও টনসিল ফুলে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিচের উপসর্গ গুলো দেখাযায়। 

 

     *প্রচন্ড জ্বর —-১০০ থেকে ১০৫ ডিগ্রি। 

 

     *খাবার খাইতে অথবা ডুকগিলতে প্রচন্ড ব্যাথা। 

 

     *ইউভূলা (এলাজিব্বা )ও নরম তালু ফুলে যাওয়া। 

 

     * টনসিল ফুলে লাল হওয়া ও লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া। 

 

     *মাথাব্যাথা ও বমি হতে পারে। 

 

     *ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়া (স্কারলেট ফিভার )

 

     *শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে প্রচন্ড কাঁপুনিও হতে পারে। 

 

 

 

 

 

 

ফ্যারিনজাইটিস এর জটিলতা 

 

গলা ব্যাথা একটি খুবই সাধারণ সমস্যা হলেও সময়মত সঠিক চিকিৎসা না করলে এর কারনে ভিবিন্ন সমস্যা দেখাদিতে পারে। যেমনঃ 

 

     মধ্যকর্ণের প্রদাহ এবং মধ্যকর্ণে পানি জমা। 

 

     ল্যারিঞ্জাইটিস,ব্রুঙ্ক্রেটিস। 

 

     কিডনির সমস্যা 

 

 

 

ফ্যারিনজাইটিস এর চিকিৎসা

 

গলাব্যাথাকে কখনই হেলা ফেলা করা উচিত নয়,তা যে কারণেই হোক না কেন। চিকিৎসা করার আগে এর কারণ নির্ণয় করা জরুরি। চিকিৎসাগুলোর মধ্যে রয়েছে ,

 

     এন্টিবায়োটিক সেবন :মুখের লালার কালচার পরীক্ষা করে জীবাণু নিশ্চিত হয়ে উপযুক্ত এন্টিবায়োটিক,উপযুক্ত মাত্রায় ব্যাবহার করতে হবে। 

 

     জ্বর ও ব্যাথানাশক ঔষধ : জ্বর ও ব্যাথানাশক হিসাবে প্যারাসিটামল ব্যবহার করাযায়। 

 

     এন্টিসেপ্টিক মাউথওয়াশ দিয়ে গড় গড় করে গলা পরিষ্কার করা। এতে ভালো উপকার পাওয়া যায়। 

 

ফ্যারিনজাইটিস এর ঘরোয়া চিকিৎসা, পরামর্শ

 

গড়গড়া :গলা ব্যাথার সবচেয়ে কার্যকরী ঘরোয়া চিকিৎসা হলো এটি। হালকা গরম পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গড় গড়া করতে হয়। লবণ এন্টিসেপ্টিকের কাজ করে এবং গরম পানি গলাথেকে কফ পরিষ্কার করে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে দিয়ে, দিনে কয়েক বার গড় গড় করে গলা পরিষ্কার করাতে হয়। 

 

ফ্রিজের খাবার এড়িয়ে চলা : গলা ব্যাথা হলে ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এতে করে গলা ব্যাথা বেড়ে যেতে পারে। গলা ব্যাথায় লেবু চা উপকারী ,এতে গলার কফও পরিষ্কার হয়। 

 

কথা কম বলা :গলাব্যাথা হলে কথা যত কম বলাযায় ততই ভালো। উচ্চস্বরে কথা বলা উচিত নয়। ও গলায় কাপড় পেচিয়ে রাখতে হয়।( বিশেষ করে শীতকালে )

                 আপনি যদি ঢাকায় টনসিল সার্জারির কথা বিবেচনা করেন, তাহলে আরও বিস্তারিত জানুন