একজিমা  বা বিখাউজ এমন একটি চর্মরোগ যা হলে তক  লালবর্ন ধারণ করে,চুলকায় আবার ফোসকুড়িও হতে পারে। ত্বকের যে কোন অংশেই একজিমা রোগ হতেপারে। তবে হাত ,পা ,বহু,হাঁটুর বিপরীতে,গোঁড়ালি ,হাতের কব্জি ,গাড় কিম্বা উর্দ বক্ষস্থলে বেশি হতে পারে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে একজিমা  বা বিখাউজ প্রদান উৎস বংশগত বলে চিকিৎসা শাস্রে এটিকে এটোপিক ডার্মাটাইটিস বলেও উল্লেখ করে। এটি ভিবিন্ন ধরনের হতে পারে। এই রোগে ত্বকের বিশেষ কোন স্থানে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। 

একজিমা বা বিখাউজ এর কারণ

একজিমার প্রকৃত কারণ নির্নয় করা সম্ভব হয়নি। ত্বকের আদ্রতা ত্বককে ব্যাকটেরিয়া এবং যে সকল পদার্থ এলার্জি সৃষ্টি করে তা থেকে রক্ষা করে। সাধারণত নিম্নলিখিত কারণ গুলো এ রোগে আক্রান্ত হয়ার জন্য দায়ী। 

>সাধারণত শুষ্ক বা রুক্ষ ত্বক একজিমার জন্য দায়ী। কারণ এ ধরনের ত্বক ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ  করতে পারেনা। 

>ভিবিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য,ডিটার্জেন্ট ,সাবান বা শ্যাম্পু থেকে এ রোগের সংক্ৰমন হতে পারে। 

>এলার্জি সৃষ্টি করে এমন বস্তূ  ,যেমন :পরাগরেণু ,ধুলা বালি,পশম ইত্যাদি থেকে এটির সংক্ৰমন হতে পারে। 

>জিনগত  করনে শরীরের পরিবর্তনের ফলে ত্বকের রোগ প্রটিরোধ ক্ষমতা কমে এটির সংক্ৰমন হতে পারে। 

>দীর্ঘমেয়াদি কোন রোগে ভোগার পর শরীরের রোগ প্রটিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেও হতে পারে। 

>ভিবিন্ন ব্যাকটেরিয়ার কারনে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে এটির সৃষ্টি হয়।

>পরিবেশ গত কারনেও একজিমা হতে পারে,যেমনঃ অতিরিক্ত গরম,অতিরিক্ত ঠান্ডা অথবা সেঁতসেঁতে ভেজা আবহাওয়া ইত্যাদি। 

>আবার হরমোনঘটিত কোন পরিবর্তন,বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের সময় কিম্বা গর্বাবস্থায় এটি হতে পারে।  

একজিমার প্রকারভেদঃ (classification)

*এটোপিক একজিমা: শরীরের যে সব স্থানে ভাঁজ পরে থাকে,যেমনঃ হাঁটুর পিছনে,কোনোইর সামনে ,বুকে ,মুখে এবং ঘাড়ে এটোপিক একজিমা হতে পারে। 

*এলার্জিক কন্ট্রাক্ট একজিমা: কোন পদার্থ বা বস্তু থেকে এ ধরনের একজিমা হয়ে থাকে। শরীরের যে অংশে এলার্জি হয় সে অংশে লালচে দানা দেখাদেয় এবং পরবর্তীতে এটা শরীরের অন্নান্য ছড়িয়ে যেতে পারে। 

*ইরিটেন্ট কন্ট্রাক্ট একজিমা: এটি এলার্জিক একজিমার মতই এবং এটি অধিক হরে ডিটারজেন্ট জাতীয় পদার্থ ব্যাবহারের ফলে হতে পারে। 

*সেবোরিক একজিমা: ম্যালাসেজিয়া ইস্ট দ্বারা সংক্রমণের ফলে সেবোরিক একজিমা হয়ে থাকে এবং এতে মাথার ত্বকে হালকা খুসকির মতো তৈলাক্ত ফুসকুড়ি দেখাদেয়। সাধারণত এক বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে এ রোগটি বেশি দেখা যায়। 

*ভেরিকোস একজিমা: রক্ত সরবরাহে সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপের কারনে বয়স্ক লোকদের পায়ের নিচের অংশে এটি হতেপারে। 

*ডিস্কয়েড একজিমা: সাধারণত বয়স্ক লোকদেরই এটি বেশিহয়। শুষ্ক ত্বক সংক্রমণের মাধ্যমে, বিশেষ করে পায়ের নিচের অংশে এটি হতেপারে। 

একজিমা বা বিখাউজ এর লক্ষণ 

ত্বক শুষ্ক বা খসখসে হওয়া,ত্বক লালচে, প্রদাহযুক্ত ত্বক বা ত্বকে চুলকানি একজিমার লক্ষণ। হাত ও পায়ে ছোট ছোট পানির ফুসকুড়ি হতেপারে।

আবার ত্বক সংক্ৰমন হলে ত্বক ভেজা ভেজা হতে পারে এবং পুচ বের হতে পারে। ত্বকের যে সমস্ত জায়গা চুলকানো হয় সেখানে পুরো হয়ে যায়। 

একজিমা এর প্রতিরোধ ও পরামর্শ

সব সময় নরম ও আরামদায়ক পোষাক পরিধান করতে হবে। সিনথেটিক বা উলের পোশাকে এলার্জির সমস্বা থাকলে তা পরিধান করা যাবেনা। কাপড় পরিষ্কারের জন্য কৃত্রিম রঙ ও সুগন্দ্বিবিহীন সাবান ব্যাবহার করা যাবেনা। 

 যে সমস্ত খাদ্য দ্রব্য খেলে একজিমা বা বিখাউজ বাড়িয়ে তোলে তা পরিহার করতে হবে। ধুলো বালি ,ফুলের রেনু এবং সিগারেটের ধোঁয়া অর্থাৎ যেগুলো এলার্জি হতে পারে তা থেকে দূরে থাকা। আক্রান্ত স্থান চুলকানো যাবেনা। 

এটোপিক একজিমার এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার আবিষ্কৃত হয়নি। নিজের প্রতি যত্নবান হলে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নেওয়ার মাদ্যমে চুলকানি বা এর বিস্তার থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

এটোপিক একজিমা রোগ হলে এবং তা দীর্ঘমেয়াদি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

একজিমা বা বিখাউজ এর চিকিৎসা/ ওষুধ

*hydrocortisone ,mild anti-itch lotion  অথবা topical corticosteroids ব্যাবহার করাযেতে পারে। 

*চুলকানি বন্ধের জন্য Antihistamin বা diphenhydramine জাতীয় ঔষধ।