প্রোস্টেটাইটিস অর্থ হলো প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ। এটি একমাত্র পুরুষদেরই থাকে,যার কাজ হলো প্রোস্টেট রস নিঃসৃত করা। কোন অবস্থায় যদি এ উপাদানে পরিবর্তন ঘটে কিংবা এর ক্ষরণ প্রতিহত হয় তাহলে পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে। প্রোস্টেট নামক গ্রন্থিটি থাকে পুরুষদের মূত্রাশয়ের নিচে। কাঠ বাদামের সমান আকৃতি। প্রোস্টেট এ অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। এ রোগ সমূহের একটি হলো প্রোস্টেটাইটিস।সাধারণত ব্যাকটেরিয়া জনিত কারনে এ ধরনের সমস্বা দেখাদেয়। 

কারণ (Causes )

  • ব্যাকটেরিয়া: ই-কলাই,ক্লেবসিলা,এন্টারোব্যাকটার,সিউডোমোনাস,সেরাসিয়া,নামক ব্যাকটেরিয়া।
  • প্রোস্টেট গ্রন্থির বেশির ভাগ সংক্ৰমন ঘটে একটি মাত্র জীবাণু দ্বারা। কখনো কখনো একাধিক জীবাণু মিলিত ভাবেও সংক্ৰমন ঘটে.

ব্যাকটেরিয়া সাধারণত প্রোস্টেট গ্রন্থিতে প্রবেশ করে তিনটি উপায়ে:

  1. মূত্রনালির উপরিভাগের সংক্ৰমনের মাদ্যমে। 
  2. প্রোস্টেট নালীতে সংক্ৰমিত প্রস্রাবের মাধমে। 
  3. মলনালীর ব্যাকটেরিয়া সচরাচর লসিকানালী বা রক্তের মাধমে অনধিকার প্রবেশ করলে। 

রোগের প্রকারভেদ (classification )

প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ দুই ধরনের হতে পারে। 

  1. তাৎক্ষণিক (একিউট )ও 
  2. দীর্ঘস্থায়ী  (ক্রনিক )

তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রোস্টেটাইটিস উভয় ক্ষেত্রেই শুক্রনালি সংক্রমিত হয়। মূত্রনালীও সংক্ৰমনের হাত থেকে রেহাই পায়না। 

রোগের লক্ষণ ও উপসর্গঃ (Signs and symptoms)

ব্যাকটেরিয়া জনিত একিউট প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ :

  • হঠাৎ করেই রোগীর দেহে জ্বর আসে। রোগী কাঁপতে থাকে। তাপমাত্রা বেড়ে যায়। 
  • পিঠের নিচে এবং তল পেটে ব্যাথা হয়। 
  • ঘন ঘন প্রস্রাব হয় ও প্রস্রাবে তীব্র ইচ্ছা থাকে। 
  • প্রস্রাব করতে কষ্ট হয়,জ্বালা পোড়া করে। 
  • রোগী অবসাদ গ্রস্থ হয়ে পরে। 

দীর্ঘস্থায়ী বা  ক্রনিক প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ :

  • প্রস্রাবের তীব্র আখাংকা ও ঘন ঘন প্রস্রাব। 
  • তলপেটে ও পিঠের নিচে ব্যাথা হয়। 
  • রাতের বেলায় প্রস্রাব ও বীর্যপাতের সময় ব্যাথা। 
  • বীর্যপাতে রক্তের উপস্থিতি থাকতে পারে। 

ল্যাবরেটরি পরীক্ষা (investigation)

  • প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা। 
  • মাইক্রোস্কপিক কালচার ও সেনটিভিটি পরীক্ষা। 
  • আল্ট্রাসোনোগ্রাম। 
  • কে,ইউ ,বি এক্সরে,ইউরোফ্লোমেট্রি। 
  • সিরাম পি,এস,এ সিস্টমেট্রোগ্রাম বা এরোডাইনামিক স্টাডি। 

চিকিৎসা (treatment)

প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহের চিকিৎসা  কালচার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নিদ্রিষ্ট জীবাণুরোধী ঔষধ প্রদান করা হয়। চিকিৎসা ক্ষেত্রে দেরি করলে নানা জটিলতা দেখাদেয়। এপিডি ডাইমিস এবং অন্ডোকোষে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ঔষধটি বেশি ব্যবহূত হয় তা হলো ট্রাইমেথোপ্রিম ও সালফামেথোক্সাজল মিশ্রণ। অবস্ব বর্তমানে সিফ্রোফ্রক্সাসিন বিপুল ব্যবহূত হয়। 

রোগীকে অন্তত ছয় সপ্তাহ এলকোহল ও যৌন কার্য থেকে বিরত থাকতে হবে।