হাড় ক্ষয় কি?

অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগ এমন একটি অসুখ যার ফলে হারের ঘনত্ব   নিদিষ্ট মাত্রায় কমে যাওয়ায় হাড় দূর্বল ও ভঙ্গুর হয়েযায়। ২০ থেকে ৩৫বছর হাড় তার পুর্নতা লাভ করে ,তারপর ৪০ বছরের পর থেকে তার ক্যালসিয়াম ফসফেট হারাতে থাকে, এর ফলে হাড় ক্ষয় বা পরিবর্তন হয়,দূর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। ৫০ বছর বয়সে ১৫ভাগ এবং ৭০/৮০বছর বয়সে ৩০ ভাগ মহিলার হিপ বোন বা নিতম্বের হাড় ভেঙে যায়। 

বিশ্বে প্রথম কয়েকটি রোগের ভেতর অস্টিওপোরোসিসের বা হাড় ক্ষয় অবস্থান তৃতীয়। অস্টিওপোরোসিস সরাসরি মৃত্যুর কারণ নয় , তবে অস্টিওপোরোসিস জনিত জটিলতার কারনে মৃত্যু হয়। 

হাড় ক্ষয় রোগের কারণ :

  • ১>মেনোপ্রাজল বা মাসিক বন্ধ পরবর্তী মহিলারা। 
  • ২>এশীয় বা ককেশিয়ানরা। 
  • ৩>যাদের পরিবারে অস্টিওপোরোসিস আছে। 
  • ৪>যারা পর্যাপ্ত পরিমানে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি ৩ গ্রহণ করেনা। 
  • ৫>যারা ব্যায়াম করেনা। 
  • ৬>যাদের ওজন কম। 
  • ৭>ধুমপায়ীরা ও এলকোহল পানকারীরা। 
  • ৮> কিছু অসুখ অস্টিওপোরোসিসের জোকিবাড়িয়ে দেয়। যেমনঃ 
  •    .রিউম্যাটওয়াড আর্থাইটিস। 
  •    যাদের শরীরে ইস্টোজেন হরমোনের মাত্রা কম। 
  •    যাদের শরীরে টেস্টোজেন  হরমোনের মাত্রা কম।
  •    .যাদের শরীরে থাইরয়েড  হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। 
  •    .যাদের শরীরে প্যারাথাইরয়েড  হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
  •    .যেসব কারনে শরীরে শোষণ বেগাত হয় , যেমনঃ celiac disease অথবা crohons disease .
  •    .যেসব রোগে দীর্ঘদিন শোয়ে থাকতে হয় , যেমনঃ ব্রেন স্টক 
  •    .এইচ আই ভি। 
  •    .স্তন ক্যান্সার। 

৯>কিছু ঔষধ অস্টিওপোরোসিসের  জন্য জোকিপুর্ন। যেমনঃ 

   .৩ মাসের বেশি সময় করটি কস্টেরয়েড ট্যাবলেট খেলে। 

   .খিঁচুনি রুদি ট্যাবলেট খেলে।

   .স্তন ক্যান্সার এর ঔষধ খেলে।

হাড় ক্ষয় রোগের প্রকারভেদ

প্রধানত ২ ধরনের অস্টিওপোরোসিস হয়। 

(১)প্রাইমারি অস্টিওপোরোসিস

(২)সেকেন্ডারি অস্টিওপোরোসিস। 

আবার প্রাইমারি অস্টিওপোরোসিসের ২টি কারন।-

  •    .একটি বয়বৃদ্দির ফলে। একে বলাহয় ‘সিনাইল অস্টিওপোরোসিস’ .
  •    .আরেকটি হলো মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সুচিত পোস্টম্যানপ্রাজল অস্টিওপোরোসিস। 
  • ভিবিন্ন রকম ঔষধ গ্রহণ জনিত কারনে সেকেন্ডারি অস্টিওপোরোসিস হয়ে থাকে। যেমনঃ এজমা রোগীর প্রচুর পরিমানে স্টেরয়েড গ্রহণ করার কারনে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হয়ে পরে। এছাড়া ভিবিন্ন হরমোনের বৈষম্যতা জাতীয় অসুখ ,যেমনঃ হাইপোথাইরয়েডিজম ,হাইপার থাইরয়েডিজম,ডায়াবেটিস মেলিটাস হলেও ধীরে ধীরে সেকেন্ডারি অস্টিওপোরোসিস হয়ে থাকে। মহিলাদের ইস্টোজেন নামক হরমোন হারকে মজবুদ করতে সাহায্য করে। মাসিক বন্ধ হবার পর ইস্টোজেন হরমোন কমে যায় ও হাড়ের ক্ষয় বেড়ে যায়। 

হাড় ক্ষয় রোগের প্রতিরোধ 

শৈশব, কৈশোর অথবা যৌবন কালে হাড়ের বৃদ্ধি হয়, সেই সময়টাই হাড়কে মজবুত করার সঠিক সময়। 
এ সময় হারকে পর্যাপ্ত পরিমানে গঠন করতে পারলে,বয়বৃদ্দির সাথে সাথে হাড়ের ক্ষয় কম হয়।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের ক্যালসিয়াম ও ফসফেট হারিয়ে তা দুর্বল হতে থাকে।
তাই হাড় শক্তিশালী রাখার জন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি -

১)সুষম খাদ্যভ্যাস অনূসরন করা :খাদ্য তালিকায় যেন প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

২)নিয়মিত শরীর চর্চা ও ব্যায়াম :নিয়মিত শরীর চর্চা ও ব্যায়াম করলে যা হয় 

  •    .মাংশপেশী ও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। 
  •    .হাড় ও হৃদপিন্ডকে শক্তিশালী করে 
  •    .জায়ান্ট গুলো সচল রাখে ও রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। 
  •    .বৃদ্ধ কালে হাড় ভাঙার ভাগ কমেযায়। 
  •    .ব্যায়াম অস্টিওপোরসিস কমায়। 
  •    .শরীরে ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হয় ,ফলে পরে গেলে হাড় ভাঙ্গার সম্ভাবনা কম থাকে। 
  •    .ব্যাথা কমে। 
  •    .আত্ববিশ্বাস ও মনবল বৃদ্ধি পায়। 

হাড় ক্ষয় রোগে এর চিকিৎসা

অস্টিওপোরসিস এর চিকিৎসায় যে সমস্ত ঔষধ ব্যাবহার করা হয় ,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো —

   .এলেন্ডরুনেট সোডিয়াম (Elendrunate sodium)

   .রিসন্দ্রনেট সোডিয়াম (risandranet sodium)

   .রিবান্দ্রনিক এসিড  (Ribandronic acid)

   .প্যারাথাইরয়েড হরমোন চিকিৎসা। 

   .ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন -ডি  সাপ্লিমেন্ট ইত্যাদি।